তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল ● কলকাতা
করোনা টিকা বাজারে আসলেই উধাও হয়ে যাবে অতিমারি, এমন প্রত্যাশা অবাস্তব। আদৌও করোনা টিকা এই রোগ মোকাবিলায় কতখানি ভূমিকা পালন করবে, তা নিয়ে সংশয় এখনও কাটেনি। করোনার সংক্রমণ ছড়ানোর প্রবণতা কিছুটা কমতে পারে, এর থেকে বেশি প্রত্যাশা করা যায় না। করোনা অতিমারির শেষ কী ভাবে হবে, এই প্রশ্নের উত্তরও ক্রমশ ধোঁয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে। ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে এ ভাবেই করোনা টিকা সম্পর্কে মত প্রকাশ করলেন বিজ্ঞানীদের একাংশ।
ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের স্কুল অব ফার্মাকোলজির অধ্যাপক পিটার দোশি ওই জার্নালে জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত কোনও ভ্যাকসিন প্রমাণ করতে পারেনি, করোনা রুখতে সেটি একশো ভাগ সফল হতে পারে। গোটা বিশ্বে ৪৮টি করোনা টিকার গবেষণা চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তারমধ্যে ১০টি টিকাকে এগিয়ে রেখেছে। এগুলোর বেশিরভাগই তৃতীয় পর্বের যাচাই স্তরে রয়েছে। কিন্তু এই পর্বেও নিশ্চিত করে তেমন কিছু পাওয়া যাচ্ছে না যা থেকে বলা যায় অতিমারি শেষ হয়ে যাবে।
করোনা টিকা সম্পর্কে পাওয়া তথ্য থেকে বোঝা যাচ্ছে, খুব বেশি হলে এই টিকা ৩০ শতাংশ সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে পারে। তারচেয়ে বেশি কিছু করতে পারবে কিনা সে নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। পাশাপাশি এই জার্নালে বিজ্ঞানীদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, করোনা টিকার ট্রায়ালে শিশু, প্রবীণ ও গর্ভবতীরা অংশগ্রহণ করেননি। তাই এই ট্রায়ালের সবদিক কিন্তু পরিষ্কার হচ্ছে না। অনেকক্ষেত্রে টিকা একেক জনের দেহে একেক রকম প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে। এমনকি যে ১০টি টিকাকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এগিয়ে রেখেছে, সেখানেও ট্রায়াল পর্বে স্বেচ্ছাসেবক অসুস্থ হয়ে পড়ার মতো ঘটনা ঘটেছে।
করোনা মহামারিতে ইতি টানতে সংক্রমণ আটকানো সবচেয়ে বেশি জরুরি। কিন্তু করোনা টিকা কি একজনের দেহ থেকে আরেক জনের দেহে ভাইরাস প্রবেশ রুখতে সক্ষম হবে, সে নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা আছে। পিটার দোশি জানান, অনেক দেশের সরকার করোনা টিকা দেওয়ার রূপরেখা তৈরি করেছেন। সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি, এমন মানুষদের আগে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা হচ্ছে। তবে, এই ভাবে টিকা দিলে তা কতটা কার্যকর হবে তা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে। কারণ, করোনা আক্রান্ত ফের এই ভাইরাসের শিকার হতে পারে এ এখন প্রমাণিত সত্য। তাই করোনা অতিমারির পথে শেষ লাইন টানার কাজ বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
(ফিচার ছবিটি গুগল থেকে নেওয়া)