তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল ● কলকাতা
স্কুল কবে থেকে স্বাভাবিক ভাবে চালু হবে সে নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার একাধিকবার আলোচনায় বসছে। এরমধ্যেই কলকাতার একাধিক নামী বেসরকারি স্কুলে ‘করোনা-ফি’ সংযোজন নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, এই অতিমারির সময় স্কুলের ফি বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রত্যেক পড়ুয়াকে অতিরিক্ত ৫০০ টাকা স্কুলকে দিতে হবে। এই অতিরিক্ত অর্থকেই ‘কোভিড-ফি’ নাম দেওয়া হয়েছে।
স্কুলগুলোর তরফে জানানো হয়েছে, করোনা অতিমারির সময়ে স্কুলের স্যানিটাইজ়েশনে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এখন প্রতিটা ক্ষেত্রে স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করতে হচ্ছে। স্কুল চালু হলে, সেই ব্যবহার আরও বাড়বে। শিশু স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতেই স্যানিটাইজ়েশনের দিকে বাড়তি নজরদারি। তাই খরচ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ফি বাড়াতে হয়েছে। তাছাড়া করোনা পরিস্থিতিতে স্কুলে যাওয়া বন্ধ থাকলেও ক্লাস বন্ধ থাকছে না। অনলাইনে নিয়মিত ক্লাস চলছে। অনেক স্কুল কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, পরবর্তী কালেও এই অনলাইন ক্লাস জারি থাকবে। তাই সেই পরিকাঠামো তৈরিতেও স্কুলকে বাড়তি খরচ বহন করতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে বেশ কিছু খাতে খরচ বৃদ্ধি হয়েছে। সেটার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতেই এই সিদ্ধান্ত।
আর্চ বিশপের অধীনে থাকা কলকাতার ছ’টি স্কুলে ইতিমধ্যেই ফি বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করেছে। অভিভাবকদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। আর্চ বিশপের তত্ত্বাবধানের বাইরে থাকা নন-ক্রিশ্চিয়ান একাধিক স্কুলের ওয়েবসাইটেও এই কোভিড-ফি নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোভিড-ফি প্রসঙ্গে পূর্ব ভারতের দায়িত্বে থাকা আইসিএসই বোর্ডের কর্তা ও লা মার্টিনিয়র স্কুলের সচিব সুপ্রিয় ধর জানান, করোনা পরিস্থিতিতে স্যানিটাইজ়েশনের বাড়তি খরচ এখন স্কুলের হিসাবের খাতায় রাখা থাকছে। তার জন্য আলাদা খরচ বরাদ্দ হচ্ছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই সেই খরচের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই ফি বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, অতিমারি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কি এই ফি বৃদ্ধি ফের যাচাই করা হবে? প্রয়োজন মাফিক যেমন ফি সংযোজন করা হল, তেমনই ফি কমানো হবে? এ প্রসঙ্গে অবশ্য বেশিরভাগ স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ফি পুর্নবিবেচনার বিষয়টি নিশ্চয়ই বিবেচনা করা হবে। তবে, এই মুহূর্তে এমন কোনও আশ্বাস দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ, করোনা পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, সে নিয়ে তো কোনও স্পষ্ট উত্তর নেই। তাই আগেই বলা যাচ্ছে না, কোন মাস পর্যন্ত এই অতিরিক্ত ফি নেওয়া হবে।
অভিভাবকদের একাংশ অবশ্য এই ফি বৃদ্ধি নিয়ে অসন্তুষ্ট। তাঁরা জানাচ্ছেন, করোনা পরিস্থিতিতে সারা পৃথিবীতে আর্থিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে। অনেকেই কাজ হারিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে স্কুলে এই ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অনেকের ক্ষেত্রেই বাড়তি সমস্যা তৈরি করবে।