শুভদীপ ভট্টাচার্য ● বহরমপুর
দেওয়ালে দেওয়ালে স্লোগানের ভিড়। তবে, এ দেওয়াল সে দেওয়াল নয়। এ দেওয়াল জ়ুকারবার্গের। আর স্লোগান লিখছেন মধুর অনুগামীরা।
বুধবার দলবিরোধী কাজের অভিযোগ তুলে জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন মণ্ডলকে (মধু) দল থেকে বহিষ্কার করেছে জেলা তৃণমূল। আর তারপর থেকেই মধুর অনুগামীরা ভরিয়ে তুলেছেন দে‘ওয়াল’
— ‘সঠিক পথেই চলছে গাড়ি। এ বার জমবে, খেলা হবে।’
— ‘খেলা হবে’
—‘খেলা শুরু’
—‘খেলা হবে, জোর কদমে খেলা হবে’
—‘খেলা হবে কাজ নিয়ে, খেলা হবে মানুষের দাবি পূরণের।’
— ‘মুর্শিদাবাদ জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের উত্থানের নায়ক মোশারফ হোসেন, পতনেরও নায়ক মোশারফ হোসেন। হবে খেলা, খেলা হবে।’
এতদিন তৃণমূল বলছিল খেলা হবে। আজ আপনার অনুগামীরাও বলছে খেলা হবে। এ খেলা কেমন খেলা? ফোনের ওপ্রান্তে হাসছেন মধু, “আমরা খেলি উন্নয়নের খেলা। সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। সেখানেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। আমি বরাবর ময়দানে ছিলাম, মাটির কাছাকাছি ছিলাম। এখনও আছি। আগামীতেও থাকব।”
যা শুনে তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবু তাহের খান বলছেন, ‘‘ওর খেলা কী হবে, দেখা যাবে। ও মাটির কাছাকাছি থাকে আর আমরা গাছের ডালে থাকি, এমন নয়। ফলে, আমাদেরও খেলা হবে।’’
যা শুনে মধুর অনুগামীদের অনেকেই বলছেন, ‘‘তৃণমূল তো সেদিন থেকে বলছে ‘খেলা হবে’। তারও বহু আগে থেকে খেলা শুরু করে দিয়েছেন আমাদের মধুদা।’’
তা কথাটা একেবারে অমূলক নয়। মধু আজ বেশ কয়েক মাস ধরেই নিজের মতো করে নানা ভাবে জনসংযোগ করে চলেছেন। কখনও ফুটবল খেলা, কখনও বস্ত্রদান, কখনও বা অন্য কোনও অনুষ্ঠান। আর সে সব অনুষ্ঠানের কোথাও তিনি দলের পতাকা বা তৃণমূলের দলনেত্রীর ছবি পর্যন্ত রাখেননি। তারও আগে, জেলা পরিষদের প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষের স্মরণসভাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল-মধুর বিবাদ প্রকাশ্যে আসে। স্মরণসভায় তৎকালীন ‘বেসুরো’ নেতা, প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর আসাকে কেন্দ্র করেও তর্জা ওঠে চরমে।
এ সব নিয়ে ক্রমেই মধুকে নিয়ে দলে অসন্তোষ বাড়ছিল দলে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর দলীয় জনসভাতেও অনুপস্থিত ছিলেন মধু। তারপরেই বুধবার তড়িঘড়ি দলের কোর কমিটির বৈঠক ডাকেন আবু তাহের খান। সেখানেই মধুকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মধুর এক অনুগামী বলছেন, ‘‘তৃণমূল দাদাকে বহিষ্কার করে দাদারই সুবিধা করে দিল। আসল খেলা তো এ বার শুরু হবে।’’
(ফিচার ছবি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেওয়া)