কল্লোল প্রামাণিক

করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হলেন নদিয়ার শান্তিপুরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা শান্তিপুরের পুর-প্রশাসক অজয় দে (৬৮)। কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে বেশ কয়েকদিন চিকিৎসাধীন থাকার  পরে শুক্রবার সকালে তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ রাজনৈতিক মহল।
অজয়বাবু দীর্ঘদিন কংগ্রেসে ছিলেন। শান্তিপুরে ১৯৮৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম কংগ্রেস দলের প্রার্থী হয়ে লড়াই করেন তিনি। সে বছর আরসিপিআই প্রার্থী বিমলানন্দ মুখোপাধ্যায়ের কাছে পরাজিত হলেও পরের নির্বাচনে (১৯৯১) ওই কেন্দ্র থেকে আরসিপিআই প্রার্থী অসীম ঘোষকে হারিয়ে বিধায়ক হন অজয়বাবু। তারপরে ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৬ ও ২০১১ টানা পাঁচ বার কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে বিধায়ক নির্বাচিত হন।
এরপরে অজয়বাবু কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। ২০১৪ সালের উপ নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে জয়লাভ করেন। তবে ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী অজয় দে জোটের কংগ্রেস প্রার্থী অরিন্দম ভট্টাচার্যের কাছে ১৯৪৮৮ ভোটে হেরে যান। এ বারের নির্বাচনেও তৃণমূল তাঁকেই প্রার্থী করে। কিন্তু এ বারেও বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকারের কাছে ১৫৮৭৮ ভোটে তিনি পরাজিত হন। ছ’বার তিনি শান্তিপুরের পুরপ্রধান ছিলেন। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি পুরসভার প্রশাসক ছিলেন। এ ছাড়াও তিনি নদিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি ছিলেন।
জানা গিয়েছে, সপ্তাহ দুয়েক আগে তাঁর শান্তিপুর হাসপাতালে তাঁর করোনা পরীক্ষা করানো হয়। পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। তারপর তিনি গৃহ নিভৃতবাসে ছিলেন। কয়েকদিন আগে শারীরিক সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় তাঁকে প্রথমে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। এ দিন সকালে তিনি মারা যান।
এক সময় নদিয়া জেলা কংগ্রেসে একসঙ্গে উচ্চারিত হত গৌরীশঙ্কর দত্ত, অজয় দে ও শঙ্কর সিংহের নাম। পরে তাঁরা তিন জনেই বিধায়ক হন এবং কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেন। এ বছর নির্বাচনে শান্তিপুর কেন্দ্রে অজয় দে ও রানাঘাট উত্তর পশ্চিম কেন্দ্রে শঙ্কর সিংহকে তৃণমূল টিকিট দিলেও দু’জনেই পরাজিত হন। তেহট্টের প্রাক্তন বিধায়ক গৌরীশঙ্কর দত্তকে এ বার টিকিট দেয়নি দল। তারপর মার্চ মাসে তৃণমূল ছেড়ে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। গত ২৮ এপ্রিল গৌরীশঙ্কর দত্তও (৭০) মারা যান।