মামুন আব্দুল কায়েম ডোমকল

তিন বছরের প্রেম। টানটান। ওই মানে, যেমন হয় আর কী! এ বলে, ‘‘আমায় দ্যাখ!’’ ও বলে, ‘‘আমায়!’’ বেশ চলছিল। যেমন চলে। বেশ এগোচ্ছিল। যেমন এগোয়। হঠাৎ তার ছিঁড়ে গেল। প্রেমিকার কাছে খবর এল— ‘সে নাকি বিয়ে করছে অন্য কারও সঙ্গে!’
মাথায় যেন বাজ পড়ল প্রেমিকার। এত বড় স্পর্ধা! এত কথা, প্রতিশ্রুতি, স্বপ্নের তা হলে কোনও দাম নেই! এ তো হতে পারে না। প্রেমিকা একবগ্গা। জব তক হ্যায় জান। প্রেমিকের বাড়ির সামনে ধর্না দিলেন প্রেমিকা। বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের ডোমকলের সেখালিপাড়া এলাকায় ততক্ষণে হইহই কাণ্ড। প্রেমিকাকে কেউ এগিয়ে দিয়েছেন চেয়ার। কেউ এগিয়ে দিয়েছেন জলের বোতল। কিন্তু প্রেমিকাও প্রেমের দিব্যি দিয়ে নাছোড়বান্দা, ‘‘আমাকে ও বিয়ে করুক, নয় মেরে ফেলুক। তা না হলে আমিই আত্মহত্যা করব।’’
প্রেমিকার হাতে প্ল্যাকার্ড। সেখানে স্পষ্ট লেখা— ‘আমাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিন বছর সম্পর্ক রাখার পরে এখন অন্য মেয়েকে বিয়ে করতে চলেছে।’’
গ্রামীণ এলাকা এমনটা শুনেছে। কিন্তু এ দৃশ্য আগে দেখেনি। অতএব, ভিড়, আরও ভিড়, ফিসফাস এবং রকমারি মন্তব্য।
এ দিকে প্রেমিকা নাগাড়ে অভিযোগ করেছেন, ‘‘প্রেমিকের কারণেই তো পড়াশোনা নষ্ট করেছি। ওর বাড়িতে ঢুকতে গেলে বাড়ির লোকজন মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। তারপরেই ধর্না-সিদ্ধান্ত।’’
প্রেমিকের খোঁজ না পেলেও তাঁর মা ছেলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘ওই মেয়ের সঙ্গে আমার মেয়ের সম্পর্ক ছিল। সেই সূত্রেই বাড়িতে আসত। এখন আমার ছেলের বিয়ে ঠিক হয়েছে শুনে তাঁকে ফাঁসানোর জন্য এ রকম করছে।’’
ফাঁস থেকেই কি ফাঁসানো? হতভম্ব সেখালিপাড়া বলছে, ‘‘কে জানে!’’