সাদা শার্টের উপর কালো কোট বা কালো গাউন মানেই তিনি আইনজীবী। অন্তত আদালত চত্বরে এই পোশাকেই ‘উকিলবাবু’দের চেনেন মক্কেলরা। কিন্তু সেই কালো রং নিয়েই বিপত্তি শুরু হয় গরমকালে। রোদে-গরমে বেশিরভাগ লোকজনই যখন কালো পোশাককে উপেক্ষা করেন, তখনও সেই চেনা পোশাকেই আদালতে কাজ করতে হয় আইনজীবীদের। প্রবল গরমে প্রায় প্রতি বছরই রাজ্যের নানা আদালতে চলে কর্মবিরতিও। সেক্ষেত্রে আবার সমস্যায় পড়েন বিচারপ্রার্থীরা।
এই বিষয়েই বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টেরই এক আইনজীবী রণনীশ গুহ ঠাকুরতা মুখ্য বিচারপতির কাছে একটি আবেদন করেছেন। সেই আবেদনে তিনি জানিয়েছেন, করোনার কারণে আইনজীবীদের পোশাকবিধি শিথিল করে একটি নির্দেশিকাও জারি হয়েছিল। সে বার আইনজীবীদের অনেকেই কালো গাউন না পরে সাধারণ পোশাক পরতেন। তবে মার্চের ৫ তারিখ থেকে আবার পোশাকবিধি লাগু হয়। এই গরমের কারণেও সেই করোনাকালের মতোই পোশাকবিধি শিথিল করার আবেদন জানিয়েছেন রণনীশ।
এই বিষয়ে তিনি ফেসবুকে একটি পোস্টও করেছেন। রণনীশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের বর্তমান বিচারব্যবস্থা কাঠামো ইংরেজ মডেলের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। উকিলদের শার্ট-প্যান্ট বা সালোয়ার-কামিজ বা শাড়ি ইত্যাদির উপরে কোট এবং গাউন পরতে হয় যা ইংল্যান্ডের ঐতিহ্য অনুসরণ করছে। কিন্তু আমাদের মতো গ্রীষ্মপ্রধান দেশে এবং বর্তমানে তাপপ্রবাহের মধ্যে এই পোশাক পরে দীর্ঘক্ষণ কাজ করা সত্যিই খুব কষ্টকর। শারীরিক ভাবে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। কাজের গতি কমে যাচ্ছে। রাজ্যের অনেক বার অ্যাসোসিয়েশন গরমের কারণে কর্মবিরতি পালন করে। কিন্তু সেক্ষেত্রেও বিচারপ্রার্থীরা সমস্যায় পড়েন। আমি শুধু মহামান্য বিচারপতির কাছে এই গরমে কালো পোশাক পরা ঐচ্ছিক করার আবেদন জানিয়েছি।’’
নদিয়ার তেহট্ট আদালতের আইনজীবী অনিকেত জোয়ারদার বলছেন, ‘‘কালো পোশাক পরে গরমে সত্যিই খুব কষ্ট হয়। আমাদের আদালতে এজলাস শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত এসি বসেনি। কবে বসবে বা আদৌ বসবে কিনা তা-ও জানি না। তবে গরমে কর্মবিরতির চেয়ে পোশাকবিধি শিথিল হওয়া ঢের ভালো।’’