তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল ● কলকাতা
করোনা আবহে থমকে গিয়েছে একাধিক স্বাস্থ্য পরিষেবা। দেশ জুড়ে অঙ্গ প্রতিস্থাপন নিয়ে যে সচেতনতার যাত্রা শুরু হয়েছিল, অতিমারির জেরে সেটাও কিছুটা থমকে গিয়েছে। কিন্তু তারমধ্যেই নজির গড়ল চেন্নাইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতাল। করোনা আবহেই এক ব্যক্তির দুটো ফুসফুস প্রতিস্থাপন করে নজির গড়লেন চিকিৎসকেরা।
৩৯ বছরের এক ব্যক্তি শেষ কয়েক বছর ধরে ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছিলেন। লকডাউনের মধ্যে তাঁর তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তখনই তাঁকে চেন্নাইয়ের ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকেরা জানান, ফুসফুস প্রতিস্থাপন জরুরি। স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য সুস্থ ফুসফুস দরকার। এরপরেই দাতার খোঁজ শুরু হয়।
ওই বেসরকারি হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি দাতা পাওয়া গিয়েছে। তারপরেই প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকেরা সপ্তাহ কয়েক আগে ৩৯ বছরের ওই ব্যক্তির দুটি ফুসফুস প্রতিস্থাপন করেন। আপাতত তিনি সুস্থ রয়েছেন।
ওই বেসরকারি হাসপাতালের অধিকর্তা পৃথা রেড্ডি বলেন, “অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পরে রোগীর সংক্রমণ এড়ানো সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। করোনা আবহে সংক্রমণের ঝুঁকি কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। তার উপরে করোনা ফুসফুসেই সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলছে। এই পরিস্থিতিতে কাজ আরও কঠিন হয়ে গিয়েছিল। তবে চিকিৎসকদের চেষ্টায় রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন।”
বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, করোনা আবহে সংক্রমণের ভয়ে একাধিক নন-কোভিড রোগকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু সেটা ঠিক নয়। এর জেরে রোগীর ভোগান্তি বাড়ছে। পাশাপাশি অন্য বিপদ আরও বেড়ে যাচ্ছে। এই প্রবণতা চলতে থাকলে পরিস্থিতি সামলানো মুশকিল হয়ে যাবে। বাড়তি সতর্কতা নিয়ে নন-কোভিড রোগীদের গুরুত্ব দিতে হবে। করোনার পাশাপাশি অন্য রোগকেও গুরুত্বের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। আর সেটা যে সম্ভব, তা চেন্নাইয়ের এই ঘটনা প্রমাণ করেছে।
অঙ্গ প্রতিস্থাপন বহু মানুষকে স্বাভাবিক জীবনযাপনের পথ দেখায়। এই প্রক্রিয়ায় সাধারণ মানুষের সচেতনতার বিষয় যুক্ত। তাই চিকিৎসার পাশাপাশি এর একটি সামাজিক দিক রয়েছে। ধারাবাহিক ভাবে এই কাজ চালিয়ে না গেলে এর সাফল্যের গতি থমকে যাবে। তাই করোনা আবহেও এই কাজ করা জরুরি বলেই মত বিশেষজ্ঞ মহলের।
(প্রতীকি ছবি। ছবিটি গুগল থেকে নেওয়া)